নিহত চার পুলিশ পরিবারকে ১ কোটি ২২ লাখ টাকা অনুদান
নিহতদের পরিবারবর্গের হাতে অনুদানের টাকা তুলে দিচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল এ কে এম শহীদুল হক। ছবি: ডিএমপি
গুলশান এবং কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসী হামলা মোকাবেলাকালে নিহত চার পুলিশ পরিবারকে ১ কোটি ২২ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গুলশান হামলায় আহত তিন পুলিশ পরিবারকেও ছয় লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়। হতাহত পুলিশ সদস্যের পরিবারবর্গকে মোট ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে শহীদ এসআই শিরু মিয়া মিলনায়তনে গুলশান ও শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় আত্মোৎসর্গকারী বীর পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এ আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল এ কে এম শহীদুল হক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। আইজিপি নিহত ও আহতদের পরিবারবর্গের হাতে অনুদানের অর্থ তুলে দেন।
ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত আইজিপি (এ্যাডমিন এন্ড অপারেশন্স) মো. মোখলেসুর রহমান, ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন এবং গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন-অর-রশিদ প্রমুখ ।
এ কে এম শহীদুল হক বলেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখে কাজ করতে বাংলাদেশ পুলিশ অঙ্গিকারাবদ্ধ। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে এ দেশটাকে নিরাপদ রাখতে চাই’।
ডিএমপি’র পক্ষ থেকে গুলশান এবং কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসী হামলা মোকাবেলাকালে নিহত চার পুলিশ সদস্যের পরিবারবর্গকে ১ কোটি ৬ লাখ টাকা এবং গুলশান হামলায় আহত তিন পুলিশ সদস্যকে ৪ লাখ টাকাসহ মোট ১ কোটি ১০ লাখ টাকা প্রদান করা হয়।
এ ছাড়া, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে নিহতদের ১৬ লাখ টাকা এবং আহত পুলিশ সদস্যদের ২ লাখ টাকাসহ মোট ১৮ লাখ টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।
গুলশান ও শোলাকিয়ায় সন্ত্রাস মোকাবিলাকালে নিহত পুলিশ সদস্যদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে পুলিশ প্রধান বলেন, নিহত ৪ চার পুলিশ সদস্য জননিরাপত্তা বিধানে তাদের জীবন উৎসর্গ করে আমাদের ঋণী করে গেছেন। বাংলাদেশ পুলিশ চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে তাদের অবদানের কথা স্বীকার করবে।
নিহতদের পরিবারবর্গকে সান্তনা দিয়ে আইজিপি বলেন, আমরা নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের পাশে থাকবো। আপনাদের যে কোন সমস্যা আমাদের জানাবেন।
আমরা আপনাদের সমস্যা সমাধানে আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকবো। আইজিপি এ ধরনের মহতি উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ডিএমপি কমিশনার এবং পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।
আইজিপি বলেন, দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ থাকতে হবে। নিজের নিরাপত্তা বিধান করে দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহবান জানান।
অতিরিক্ত আইজিপি মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ একটি পরিবার। এ পরিবারের কোন সদস্যের বিপদে-আপদে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা পাশে থাকবে। এখন আর কেউ নিজেকে একা ভাবার অবকাশ নেই।
ডিএমপি কমিশনার মো.আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলায় পুলিশ নিজের জীবন বাজি রেখে মানুষের জীবন রক্ষা করেছেন। পুলিশ সদস্যরা যে পেশাদারিত্ব দেখিয়েছে তা সত্যিই বিরল। তিনি বলেন, জনগণের নিরাপত্তা বিধানে আমরা সব কাজই করবো।
অনুষ্ঠানে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সকল পর্যায়ের পুলিশ সদস্যগণ এবং নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


0 comments: