কোন বাসায় আফসানার মৃত্যু তা এখনো নিশ্চিত নয়
![]() |
| ফেরদৌস আফসানা |
এদিকে আফসানার মৃত্যুকে হত্যা দাবি করে এবং দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় গতকালও বিক্ষোভ করেছে ছাত্র ইউনিয়ন।
গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত হত্যা মামলা হয়নি। এ ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন তেজগাঁও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান ওরফে রবিনকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
১২ আগস্ট আফসানার লাশ মিরপুরের আল-হেলাল হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান দুই যুবক। আফসানার গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ে। রাজধানীর মানিকদীতে একটি বাসায় থেকে শেওড়াপাড়ার বেসরকারি সাইক পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে স্থাপত্য বিভাগে পড়তেন তিনি।
মানিকদী বাজার এলাকার চারতলা একটি ভবনের নিচতলার একটি ঘরে দুই বছর ধরে থাকতেন আফসানা। তবে ওই ঘরেই, নাকি অন্য কোথাও তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তাঁর প্রতিবেশীরা।
বাড়িটির মালিকের এক আত্মীয়া নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, মেয়েটি প্রথমে এই এলাকায় এসে একটি টিনশেড ঘরে উঠেছিলেন। এরপর সামনের একটি বাড়ির শিশুদের পড়ানো শুরু করেন। আট মাস পরে মেয়েটি যে বাড়িতে পড়াতেন, সে বাড়ির নিচতলার একটি ঘরে থাকা শুরু করেন। এলাকাবাসী জানত মেয়েটি বিবাহিত। সপ্তাহান্তে এক তরুণ আসতেন। সবাই জানতেন তিনি মেয়েটির স্বামী। সেই তরুণই ছাত্রলীগের নেতা হাবিবুর রহমান। মেয়েটি মাঝে মাঝে পাশের সবুজ ছাতা গলির একটি বাসায় যেতেন।
তবে মেয়েটি কোথায় মারা গেলেন, সে বিষয়ে জানতে চাইলে ওই
নারী বলেন, ‘বিষয়টা আমরা বুঝতে পারছি না। পত্রিকায় জানলাম, বিকেলে তাঁকে
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু এলাকার কেউ তাঁকে বাসা থেকে নিতে
দেখেনি।’
স্থানীয় একজন দোকানদার বলেন, ওই দিন সবুজ ছাতা গলির একটি
বাসা থেকে বাঁচাও বাঁচাও শব্দ শুনেছেন তিনি। নারী কণ্ঠের, না পুরুষ কণ্ঠের
চিৎকার ছিল তা খেয়াল করেননি।
মেয়েটি কোন বাসায় মারা গেছেন, জানতে চাইলে কাফরুল থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিকদার মোহাম্মদ শামীম হোসেন বলেন, ‘আমরা
বিষয়টি নিয়ে এখনো কাজ করছি। এখন পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।
পুলিশ তদন্ত করছে।’
বিক্ষোভ-প্রতিবাদ: বরিশাল অফিস
জানায়, আফসানাকেহত্যা করা হয়েছে দাবি করে খুনিদের শাস্তির দাবিতে ছাত্র
ইউনিয়ন বরিশাল জেলা ও মহানগর শাখা গতকাল বিকেলে নগরের অশ্বিনীকুমার হল
চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে। ছাত্র ইউনিয়নের জেলা সভাপতি শারমিন
জাহানের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে উদীচীর জেলা সভাপতি বিশ্বনাথ দাস
মুনশী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) জেলা সভাপতি এ কে আজাদ
প্রমুখ বক্তব্য দেন।
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
জানান, একই দাবিতে গতকাল মৌলভীবাজারের চৌমোহনা চত্বরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
সমাবেশ করে ছাত্র ইউনিয়ন মৌলভীবাজার জেলা সংসদ। জেলা সংসদের সভাপতি কামরুল
হাসানের সভাপতিত্বে সমাবেশে সিপিবির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিলিমেষ
ঘোষ, যুব ইউনিয়ন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর জয়েস, লাউয়াছড়া বন ও
জীববৈচিত্র্য রক্ষা আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ ভূঁইয়া প্রমুখ বক্তব্য
দেন। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে।
একই দাবিতে সকালে রাজধানীর নয়াপল্টন মোড়ে মানববন্ধন ও
সমাবেশ করে ছাত্র ইউনিয়নের পল্টন থানা সংসদ। সমাবেশ থেকে কাল রোববার
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানানো হয়।
বিল্লাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন সিপিবির কেন্দ্রীয়
নেতা জলি তালুকদার, যুব নেতা ত্রিদিব সাহা, শ্রমিকনেতা মঞ্জুর মঈন প্রমুখ।



0 comments: